ময়ূর

দেশের একমাত্র জ্ঞানকোষে নাম উল্লেখ আছে দেশি ময়ূর। কিন্তু সে নামটি উল্লেখ করা খুব সঙ্গত নয়

কেননা গত চার দশকের বেশি সময় ধরে এই চোখধাঁধানো সৌন্দর্যের পাখিটি আমাদের দেশে অনুপস্থিত। সর্বশেষ ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিভাগের পাতাঝরা বনে দেখা গেছে।

অথচ উপমহাদেশের অন্য সব দেশেই আছে এবং যত্রতত্র নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ায়।

সে কারণে আইইউসিএন পাখিটিকে বিলুপ্তি হুমকিমুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। 

একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ময়ূর ঠোঁট থেকে তার মন্ত্রমুগ্ধকর সম্পূর্ণ পরিণত লেজের প্রান্ত পর্যন্ত সাড়ে সাত ফুট লম্বা হতে পারে। যে মানুষ কোনোদিন ময়ূর দেখেনি; পাখিটিকে দেখে অন্তত কয়েক মিনিট স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য। এমন হৃদয়কাড়া সৌন্দর্য দেখতে পাওয়া একটি বিরল সৌভাগ্য।

ময়ূরের পাখা খুব বড় এবং শক্তিশালী নয়। তথাপি ময়ূর বেশ স্বচ্ছন্দে উড়তে সক্ষম। অবশ্য পুরোপুরি পরিণত লেজওয়ালা ময়ূর সঙ্গত কারণেই চট করে হাওয়ায় ভাসতে পারে না, কয়েক মুহূর্ত সময় নিয়ে উড়াল দেয়।

এ কারণে এদের মাংসাশী পশুর শিকারে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এরা দীর্ঘ উড্ডয়নেও পারঙ্গম নয়। স্বল্প দূরত্বে উড়ে গিয়ে গাছে বসে। খাটো লেজওয়ালা ময়ূর বহুদূর উড়ে যেতে পারে।

মজার বিষয় হচ্ছে, ময়ূরের মনোমুগ্ধকর লম্বা লেজটি আসলে লেজ নয়। এটি মূল লেজের ঢাকনা। দুইশর বেশি লম্বা পালক দীর্ঘ হয়ে একটি আকর্ষণীয় ট্রেনে পরিণত হয়। মূল লেজটি মাত্র বিশটি পালক দিয়ে তৈরি। ট্রেনটিকে উপরে পূর্ণভাবে মেলে ধরে প্রদর্শন করতে মূল লেজটি সাহায্য করে থাকে।

পুরুষ ময়ূরের দুই বছর বয়স থেকেই ট্রেনটি তৈরি হতে থাকে। তবে সেটি চোখের মতো গোল গোল প্রিন্টসহ পরিপূর্ণ রূপ ধারণ করে ৪-৬ বছরে। তরুণ পুরুষ ময়ূরের ট্রেন সেভাবে পূর্ণতা পায় না এবং তার প্রদর্শনী দেখতে ততটা আকর্ষণীয় নয়। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //